ক্রিকেট বিনোদনকে ছাপিয়ে গিয়ে সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের জীবনের প্রতিটি অংশের মধ্যে অতপ্রতভাবে জড়িয়ে গেছে। গতকাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে জাতি-ধর্ম, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের তাকিয়ে ছিলেন। ব্লু ব্রিগেডরা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দুরন্ত জয় তুলে নিয়ে কোটি কোটি ভারতীয়দের স্বপ্ন সার্থক করে। এই গুরুত্বপূর্ণ জয়ের মুহূর্তে ধারাভাষ্যকার ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইরফান পাঠান রীতিমতো কেঁদে ফেলেছিলেন। এর পিছনে ব্যক্তিগত জীবনের এক মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়কেও তুলে ধরেন তিনি।
গতকাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতীয় দল টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই ব্লু বিগ্রেডরা একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায়। এইরকম গুরুত্বপূর্ণ সময় ভারতীয় তারকা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গে জুটি বেঁধে স্কোরবোর্ড এগিয়ে নিয়ে যান। ফলে এই তারকা ব্যাটসম্যানের ৭৬ রানে ভর করে ভারতীয় দল প্রোটিয়াদের ১৭৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয়।
এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে হার্দিক পান্ডিয়া, জসপ্রীত বুমরাহ এবং আর্শদীপ সিং বল হাতে রীতিমতো জ্বলে ওঠেন। এর সঙ্গেই সূর্যকুমার যাদব ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে ডেভিড মিলারের অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিয়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন। ভারতীয় দল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মুহূর্তে স্টার স্পোর্টসের অন্যতম তারকা ধারাভাষ্যকার ইরফান পাঠান রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি জানান এই ঐতিহাসিক জয় তার ব্যক্তিগত জীবনের একটি মর্মান্তিক ঘটনার মধ্যে অনেকটাই আলো এনে দিয়েছে। উল্লেখ্য সম্প্রতি ইরফান পাঠানের ব্যক্তিগত মেক-আপ শিল্পী ফায়াজ আনসারির ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটি সুইমিং পুলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। ভারতীয় এই প্রাক্তন তারককার ক্রিকেটার ধারাভাষ্য করার সময় বলেন, “ভারতীয় দল জানে না কিন্তু আপনারা জানেন গত ১০ দিন আমার জন্য খুব কঠিন সময় ছিল। তাই এগুলি শুধু কষ্টের কান্না নয় এগুলির মধ্যে আনন্দের অশ্রুও আছে।”
তিনি ভারতীয় দলের পারফরমেন্সের বিষয়ে বলেন, “আমি জসপ্রীত বুমরাহ, রোহিত শর্মা, হার্দিক পান্ডিয়ার কাছে কৃতজ্ঞ। সূর্যকুমার যাদবের অবিশ্বাস্য ক্যাচ আমি কোনদিন ভুলবো না। মৃত্যুর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে পর্যন্ত মনে রাখবো। কারণ ডেভিড মিলার অনেক বড়ো একজন ব্যাটসম্যান। তিনি যদি শেষ ওভারের প্রথম বলেই ৬ মেরে দিতেন তাহলে ম্যাচ হাতের থেকে বেরিয়ে যেত।” উল্লেখ্য ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলে ইরফান পাঠান গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।